ওজন কমাতে চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম - চিয়া সিড খাওয়ার সময়
কাঠ বাদাম এর উপকারিতা - কাঠ বাদাম খাওয়ার নিয়মপ্রিয় পাঠক, আপনারা অনেকেই জানতে চেয়েছেন ওজন কমাতে চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম ও
চিয়া সিড খাওয়ার সময় সম্পর্কে। তারই ধারাবাহিকতায় আজকের এই আর্টিকেল লেখা
হয়েছে।আজকের আর্টিকেল যদি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বিস্তারিত পড়ে নেন। তাহলে ওজন
কমাতে চিয়া সীড খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানতে পারবেন। আমরা জানি চিয়া সিডকে
সুপার ফুড বলা হয়।
কারণ চিয়া সিড আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী। বর্তমান সময়ে অনেকেই স্বাস্থ্য
নিয়ে অনেক বেশি সচেতন থাকতে চাই। প্রতিদিনের খাবার তালিকায় যদি চিয়া সিড রাখতে
পারেন তাহলে আপনার স্বাস্থ্য নিয়ে সমস্যায় থাকতে হবে না। চিয়া সিডে থাকা
বিভিন্ন উপাদান যেমন, ফাইবার, স্বাস্থ্যকর ফ্যাট, প্রোটিন, ওমেগা-৩ ফ্যাটি
অ্যাসিডের পাশাপাশি অন্যান্য উপাদান থাকার কারণে।
যাদের ওজন অনেক বেশি তাদের ওজন কমাতে সাহায্য করে।কিন্তু চিয়া সিড খেলেই যে ওজন
কমবে বিষয়টি তা নয়। নিয়ম মেনে চিয়া সিড খাওয়ার পাশাপাশি ডায়েট এবং
ব্যায়ামও করতে হবে। তো চলুন ওজন কমাতে চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে
বিস্তারিত আলোচনা করা যাক।
চিয়া সিড খেলে কি হয়?
চিয়া সিড খাওয়ার ফলে আমাদের শরীরের বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সমাধান হয়। চিয়া
সিড খাওয়ার ফলে হৃদরোগের ঝুকি কমে যায় এবং রক্তে ক্ষতিকর কোলেস্টরলের মাত্রা
কমায়। এছাড়াও রক্তে চিনির মাত্রা কমিয়ে ডায়াবেটিস ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
নিয়মিতচিয়া সিড খেলে শরীর থেকে বিভিন্ন ক্ষতিকর টক্সিন বা বজ্র পদার্থ বের হয়ে
যায়।
এছাড়াও পেটে গ্যাসের সমস্যা কমায় ভালো ঘুম হতে সাহায্য করে।নিয়মিত চিয়া সিড
খেলে মুখের ত্বক চুল নখ সুন্দর হয়। আবার অতিরিক্ত চিয়া সিড সেবনের ফলে অনেক
সময় হজমের সমস্যা তৈরি হয়। এছাড়াও অতিরিক্ত ফাইবার খাওয়ার ফলে গ্যাস,পেটব্যথা
সহ ডায়রিয়া সমস্যা দেখা দিতে পারে। এজন্য চিয়া সিড খাওয়ার পাশাপাশি বেশি
পরিমাণে পানি খেতে হবে।
ওজন কমাতে চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম
নিয়ম করে চিয়া সিড না খেলে এর উপকারিতা পাওয়া যায় না। প্রতিদিন চিয়া সিড
খাওয়ার নিয়ম হিসেবে ১ গ্লাস পানির সাথে ২ চা চামচ চিয়া সিড এবং ২ চামচ লেবুর
রস মিশিয়ে সকালে এবং রাতে ঘুমানোর আগে খেলে দ্রুত ওজন কমাতে সাহায্য করে। চিয়া
সিড সাধারণত তাপমাত্রায় পানিতে ৩০ মিনিট ভিজিয়ে রেখে খেলে প্রোটিনের পরিমাণ
বেশি থাকার কারণে ক্ষুধা নিবারণ হবে।
নিজস্ব কোন স্বাদ না থাকায় বিভিন্ন উপায়ে বিভিন্ন উপাদানের সাথে মিশে খাওয়া
যেতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে একজন মানুষের জন্য প্রতিদিন ১০০ গ্রাম চিয়া সিড
খাওয়া উচিত।ওজন কমানোর জন্য প্রতিদিন আমাদের ব্যায়াম করা উচিত এবং ডায়েটে
চিয়া সিড রাখার দরকার। পুষ্টিবিদরা সব সময় এই পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
পুষ্টিবিদদের মতে চিয়া সিডে থাকা ফাইবার আমাদের শরীরে হজম ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।যার ফলে হজম ক্ষমতা বৃদ্ধির সাথে মেদ কমিয়ে ক্যালরির ঘাটতি
পূরণ করে। এবং অতিরিক্ত ওজন কমিয়ে ফেলে।এছাড়াও ও চিয়া সিডে থাকা বিভিন্ন
পুষ্টি উপাদান শরীরের বিভিন্ন ঘাটতি পূরণে কার্যকরী উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
তাই নিয়ম মেনে চিয়া সিট খাওয়া জরুরী।
চিয়া সিড খাওয়ার পরিমাণ
নিয়ম করে চিয়া সিড খেলে শরীরে বিভিন্ন ধরনের উপকার পাওয়া যায়। প্রতিদিন খালি
পেটে ১ গ্লাস সাধারণ তাপমাত্রার পানির সাথে ২ চা চামচ চিয়া সিড এবং ২ চা চামচ
লেবুর রস মিশিয়ে সকালে ও রাতে ঘুমানোর আগে খেলে দ্রুত ওজন কমতে সাহায্য
করে।চিয়া সিড সাধারণ তাপমাত্রায় পানিতে ৩০ মিনিট খাওয়ার আগে ভিজিয়ে রাখলে
প্রোটিনের পরিমাণ বেশি থাকায় ক্ষুধার নিবারণ হয়।
চিয়া সিডের নিজস্ব কোন স্বাদ না থাকায় এটি যে কোন খাবারের সাথে মিশিয়ে খাওয়া
যায়। পুষ্টিবিদদের মতে একজন মানুষের দৈনিক ১০০গ্রাম চিয়া সিড খাওয়া দরকার।
তাহলে শরীরের বিভিন্ন রকমের সমস্যার সমাধান হতে সাহায্য করে এবং রোগ প্রতিরোধ
ক্ষমতা বাড়িয়ে শরীরকে সুস্থ রাখে।
গর্ভাবস্থায় চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম
চিয়া সিড যে কোন মানুষের শরীরের জন্য খুব উপকারী একটি উপাদান। চিয়া সিড খাওয়ার
ফলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। তবে গর্ব অবস্থায় চিয়া সিড খাওয়ার আগে
অবশ্যই সতর্কতা অবলম্বন করা দরকার। যদিও তেমন কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই তবুও
ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চিয়া সিড খাওয়া উচিত। কারণ গর্ভাবস্থা সাধারণ
অবস্থা থেকে সবকিছু পরিবর্তন হয়ে অস্বাভাবিক হয়ে যায়।
তাই এক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ সবচেয়ে জরুরী।ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চিয়া
সিড খাওয়ার পরিমাণ নিশ্চিত করতে হবে। গর্ভ অবস্থায় চিয়া সিড আপনার শরীরের জন্য
উপকারী হতে পারে কিন্তু অতিরিক্ত চিয়া সিড খাওয়ার ফলে আবার সমস্যার সৃষ্টি হতে
পারে এজন্য ডক্টরের পরামর্শ খুবই জরুরী।অতিরিক্ত চিয়া সিড খেলে আমাদের শরীরে বেশ
কিছু সমস্যা দেখা দিতে পারে।
তাদের মধ্যে হতে পারে বায়োলজিক্যাল রিক্স ডায়াবেটিস এবং গর্ভকালীন জনিত বিভিন্ন
অসুখসহ এই সমস্যা গুলির উন্নতি হতে পারে।তাই গর্ভকালীন সময়ে চিয়া সিড খাওয়ার
পরিমাণ ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী নির্ধারণ করা জরুরী।
চিয়া সিড ও মধু খাওয়ার নিয়ম
চিয়া সিড যেমন আমাদের শরীরের জন্য উপকারী,তেমনি মধুও আমাদের শরীরের জন্য বেশ
উপকারী। আমরা উপরে চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জেনেছি এবং মধু খাওয়ারও
নিয়ম সম্পর্কে আমাদের জানা আছে। কিন্তু মধু ও চিয়া সিড একসঙ্গে খাওয়ার নিয়ম
সম্পর্কে আমাদের তেমন কোন ধারনা নাই। তাই আলোচনার এই অংশে চিয়া সিড ও মধু
খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে আলোচনা করা হবে।
চলুন জেনে নেই চিয়া সিট ও মধু খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে।১ চা চামচ চিয়া সীড
পানিতে ভিজিয়ে রেখে ১ চা চামচ মধুর সাথে মিশিয়ে সকালে কিংবা রাতে খেলে ভালো
উপকার পাওয়া যায়। যারা মিষ্টি খেতে পছন্দ করেন তারা মধুর পরিমাণ একটু বাড়িয়ে
নিতে পারেন এতে কোন সমস্যা হবে না।এছাড়াও চাইলে ওটস, পুডিং, জুস, ইত্যাদির
উপাদানের সঙ্গে চিয়া সিড ও মধু মিশিয়ে খেয়ে নেয়া যায়।
দুধ দিয়ে চিয়া সিড খেলে কি হয়?
দুধের সঙ্গে চিয়া সিড মিশ্রিত করার ফলে এই মিশ্রণের ফাইবারের পরিমাণ বেশি হয়।
ফাইবার মেটাবলিজম রেট বাড়িয়ে শরীরের ওজন কমায়, এবং কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর
করে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। এছাড়াও রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়তে
দেয় না। এছাড়াও দুধ এবং সিয়া সিডের মিশ্রণ ক্যালসিয়ামের দুর্দান্ত উৎস।
চিয়া সিড কি সারারাত ভিজিয়ে খাওয়া যায়?
হ্যাঁ,একটি পরিষ্কার গ্লাসে স্বাভাবিক তাপমাত্রার পানি নিয়ে ২ চা চামচ চিয়া সিড
সারারাত ভিজিয়ে রেখে সকালে এক গ্লাস দুধের সাথে অথবা অন্য কোন উপাদানের সাথে
খেতে পারেন। এতে করে চিয়া সিড আপনার খাওয়ার পরিমাণ কমিয়ে দিয়ে ওজন কমাতে
সাহায্য করবে।
পোস্ট সম্পর্কিত প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্নঃ চিয়া সিড এবং মধু একসাথে খাওয়া যাবে কি?
উত্তরঃ হ্যাঁ,খাওয়া
যাবে।
প্রশ্নঃ গর্ভাবস্থায় চিয়া সিড খাওয়া যাবে কি?
উত্তরঃ হ্যাঁ
যাবে,তবে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী।
প্রশ্নঃদুধের সাথে চিয়া সিড খাওয়া
যাবে কি?
উত্তরঃ হ্যাঁ,খাওয়া যাবে।
প্রশ্নঃ চিয়া সিড কি ওজন কমাতে
সাহায্য করে?
উত্তরঃহ্যাঁ,সাহায্য করে।
শেষকথা- ওজন কমাতে চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম
প্রিয় পাঠক,আজকের আর্টিকেলে আলোচনা করেছি ওজন কমাতে চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম
এবং চিয়া সিড খাওয়ার সময় সম্পর্কে। আপনারা যারা চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম
সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন। আজকের আর্টিকেল তাদের জন্য খুব উপকারী ছিল।আজকের
আর্টিকেলে চিয়া সিড খাওয়ার সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আপনি যদি
সম্পূর্ণ আর্টিকেল বিস্তারিত পরে থাকেন।
তাহলে আপনার জন্য খুব উপকারী ছিল আজকের এই আর্টিকেল। আজকের এই আর্টিকেল পড়ে
যদি আপনার ভালো লাগে। তাহলে আপনি আপনার বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করতে ভুলবেন না।
এবং উক্ত আর্টিকেলে যদি কোন ভুল থাকে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন, ধন্যবাদ।
পোস্ট ট্যাগ-
চিয়া সিড খাওয়ার অপকারিতা,ওজন কমানোর জন্য চিয়া বীজ পান করার সেরা
সময়,চিয়া সিড খাওয়ার সময়,চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা,চিয়া সিড
খেলে কি ওজন বাড়ে,গর্ভাবস্থায় চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম,চিয়া সিড এর উপকারিতা
ও অপকারিতা,চিয়া সিড খেলে কি হয়।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url