সাপে কামড়ালে প্রাথমিক চিকিৎসা ২০২৪ - সাপে কাটার প্রাথমিক চিকিৎসা, দ্রুত জেনে নিন
কম্বোডিয়া ভিসার দাম কত ২০২৪ - কম্বোডিয়া কাজের বেতন কতআজকে আমি আলোচনা করব সাপে কামড়ালে প্রাথমিক চিকিৎসা ২০২৪সম্পর্কে। গ্রামীণ জন
জীবনে সাপে কামড়ানো একটি সাধারণ বিষয়। প্রতিনিয়ত সাপে কামড়ানোর বিষয় শোনা
যায়। এজন্য সাপে কামড়ালে প্রাথমিক চিকিৎসা ২০২৪ সম্পর্কে জেনে থাকা ভালো। আপনি
যদি না জেনে থাকেন সাপে কামড়ালে প্রাথমিক চিকিৎসা ২০২৪ সম্পর্কে। তাহলে এই
আর্টিকেলটি আপনার জন্য।
এ আর্টিকেলটি বিস্তারিত পড়ার মাধ্যমে আপনি জানতে পারবেন সাপে কামড়ালে প্রাথমিক
চিকিৎসা ২০২৪ সম্পর্কে। এছাড়াও আর্টিকেলে আরো আলোচনা করা হবে সাপে কাটার
প্রাথমিক চিকিৎসা সম্পর্কে। এবং আরো আলোচনা করা হবে সাপে কামড়ানোর লক্ষণ, বিষধর
সাপে কামড়ানোর লক্ষণ এবং সাপে কামড়ালে কোন ইনজেকশন দিতে হয়। তো চলুন দেরি না
করে জেনে নেই সাপে কামড়ালে প্রাথমিক চিকিৎসা ২০২৪ সম্পর্কে।
সাপে কামড়ানোর লক্ষণ
আমরা যারা গ্রামে বসবাস করি তাদের ক্ষেত্রে সাপে কামড়ানো একটি সাধারণ বিষয়।
কারণ সাপ প্রকৃতির পরিবেশে বন জঙ্গলে থাকে। গরম কালে সাপ বন জঙ্গল থেকে ফাঁকা
জায়গায় আসে এবং ঘোরাফেরা করে ঠান্ডা বাতাসের জন্য। তাই এই সময় সাপের উৎপাত
একটু বেশি দেখা যায়। রাতের অন্ধকারে সাপের চলাফেরার সময় যদি কোন মানুষ অথবা
পশুপাখে তাদের সংস্পর্শে আসে তখন সাপ দংশন করে।
মানুষকে দংশন করার পরে রাতের অন্ধকারে বা দিনের বেলাতে সব দংশন করার পরে সঙ্গে
সঙ্গে সে জায়গা থেকে পালিয়ে যায়। যে কারণে সাপে কামড়ালো না অন্য কোন প্রাণী
কামড়ালো এটা বুঝতে একটু সমস্যা হয়। যার কারণে অনেক সময় না বুঝে ওঠার কারণে
বিষক্রিয়ায় মানুষ মারা যায়। কি লক্ষণ দেখলে আমরা বুঝতে পারবো যে সাপে দংশন
করেছে।নিচে তা আলোচনা করা হলো-
সাপে কামড়ানোর সাধারণ লক্ষণ
- ক্ষতস্থানে প্রবল ব্যথা, ফোলাভাব, এবং লালভাব।
- দুটি দংশনের চিহ্ন।
- ক্ষতস্থান থেকে রক্তপাত।
- বমি বমি ভাব, বমি, ডায়রিয়া।
- মাথা ঘোরা, মূর্ছা যাওয়া।
- দ্রুত হৃৎস্পন্দন।
- ঠান্ডা, আঠালো ত্বক।
- শ্বাসকষ্ট।
- অস্পষ্ট দৃষ্টি।
- ঘাড় শক্ত হয়ে যাওয়া।
- অবশতা।
- অচেতন হয়ে পড়া।
বিষধর সাপের কামড়ের লক্ষণ
পৃথিবীতে বহুৎ প্রজাতির সাপ রয়েছে। এদের ভেতর কোনো সাপের বিষ থাকে আবার কোন
সাপের বিষ থাকে না। আবার কিছু প্রজাতির সাপ আছে তাদের বিষ খুব তীক্ষ্ণ হয়। যা
মানুষকে অল্প সময়ের মধ্যেই মারা যেতে বাধ্য করে। কিছু বিষধর সাপের কামড়ের
লক্ষণ। যা দেখলে আমরা বুঝতে পারবো যে বিষধর সাপে দংশন করেছে-
নিউরোটক্সিক বিষের লক্ষণ
- পেশী দুর্বলতা, অবশতা।
- শ্বাসকষ্ট।
- লকজও।
- শরীরে পক্ষাঘাত।
হেমোটক্সিক বিষের লক্ষণ
- অতিরিক্ত রক্তপাত।
- অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণ।
- রক্ত জমাট বাঁধতে সমস্যা।
সাইটোটক্সিক বিষের লক্ষণ
- টিস্যু ধ্বংস।
- ত্বকের ফোলাভাব ও ক্ষত।
- অঙ্গ ক্ষতি।
কখন চিকিৎসা নেবেন
সাপে কামড়ালে দ্রুততম সময়ের মধ্যে হাসপাতালে যেতে হবে।
নিম্নলিখিত লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুততম সময়ের মধ্যে চিকিৎসা নেওয়া জরুরি
- শ্বাসকষ্ট
- অস্পষ্ট দৃষ্টি
- ঘাড় শক্ত হয়ে যাওয়া
- অবশতা
- অচেতন হয়ে পড়া
কি করবেন না
- ক্ষতস্থানে কেটে বা চুষে বিষ বের করার চেষ্টা করবেন না।
- ক্ষতস্থানে বাঁধন দেবেন না।
- আক্রান্ত ব্যক্তিকে দৌড়াতে বা হাঁটতে দেবেন না।
- আক্রান্ত ব্যক্তিকে ক্যাফেইন বা অ্যালকোহলযুক্ত পানীয় দেবেন না।
- ওঝা বা বেদের মাধ্যমে চিকিৎসা করাবেন না।
প্রতিরোধ
- সাপের আবাসস্থল এড়িয়ে চলুন।
- রাতের বেলায় বাইরে বের হওয়ার সময় সাবধানতা অবলম্বন করুন।
- উঁচু জুতা ও পোশাক পরুন।
- ঘরবাড়ি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখুন।
সাপে কামড়ালে প্রাথমিক চিকিৎসা ২০২৪
যদি কোন ব্যক্তিকে সাপে দংশন করে তাহলে প্রথমে বিচলিত না হয়ে। ওই ব্যক্তিকে
আশ্বস্ত করতে হবে যে কোন রকমের সমস্যা হবে না এবং তাকে পর্যাপ্ত পরিমাণে সাহস
দিতে হবে। যাতে করে সাপে কামড়ানো ব্যক্তি মানসিকভাবে দুর্বল হয়ে না পড়ে। তারপর
তাকে কিছু প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদানের মাধ্যমে ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে।
সাপে কামড়ানো ব্যক্তিকে প্রাথমিক অবস্থায় যা করা প্রয়োজন। নিচে তা আলোচনা করা
হলো-
প্রথমত
- আক্রান্ত ব্যক্তিকে আশ্বস্ত করুন এবং সাহস দিন। আতঙ্ক বিষক্রিয়ার প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করতে পারে।
- সাপের বিবরণ জানার চেষ্টা করুন। যদি সম্ভব হয়, সাপটিকে মেরে ফেলুন এবং হাসপাতালে নিয়ে যান। মৃত সাপের বিষক্রিয়া নির্ণয় করা সহজ হয়।
- আক্রান্ত স্থানটি সাবান ও পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
- আক্রান্ত স্থানটিকে হৃৎপিণ্ডের চেয়ে নিচে স্থির রাখুন।
- কোনো গয়না বা আঁটসাঁট পোশাক খুলে ফেলুন যা ফোলাভাব বৃদ্ধি করতে পারে।
- ক্ষতস্থানে কাটা বা চিড়ে বিষ বের করার চেষ্টা করবেন না। এতে বিষ ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়।
- আক্রান্ত ব্যক্তিকে খাবার বা পানীয় খাওয়াবেন না।
- তাকে হাসপাতালে নিয়ে যান, দ্রুততম সময়ে।
কিছু ভুল ধারণা
- সাপে কামড়ানোর স্থানে ট্যুরনিকেট বাঁধা উচিত নয়। এতে বিষক্রিয়া ত্বরান্বিত হতে পারে।
- মুখ দিয়ে বিষ বের করার চেষ্টা করা উচিত নয়। এতে বিষক্রিয়া ছড়িয়ে পড়তে পারে।
- ওঝা বা কবিরাজের কাছে নিয়ে যাওয়া উচিত নয়। বিষক্রিয়া দ্রুত মারাত্মক হতে পারে, তাই দ্রুত চিকিৎসা প্রয়োজন।
কিছু টিপস
- আপনার এলাকায় বিষধর সাপের প্রজাতি সম্পর্কে জ্ঞান রাখুন।
- সাপে কামড়ানোর প্রাথমিক চিকিৎসার প্রশিক্ষণ নিন।
- আপনার বাড়িতে সাপ প্রতিরোধ ব্যবস্থা গ্রহণ করুন।
- চিকিৎসককে সাপের বিবরণ এবং কামড়ানোর সময় সম্পর্কে জানাবেন।
- চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী অ্যান্টিভেনম দেওয়া হবে।
- প্রয়োজনে রোগীকে পর্যবেক্ষণে রাখা হবে।
মনে রাখবেন
- সাপে কামড়ানো একটি জরুরি অবস্থা।
- দ্রুত চিকিৎসা প্রয়োজন।
- প্রাথমিক চিকিৎসা জানা জীবন বাঁচাতে পারে।
আরও তথ্যের জন্য
- স্বাস্থ্য অধিদপ্তর: https://www.mohfw.gov.bd/
- বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা: https://www.who.int/
সাপে কামড়ানোর কিছু ছবি
সাপ একটি বিষধর প্রাণী। এরা বন জঙ্গলে থাকে। গরমকালে এরা মানুষের সংস্পর্শে আসে
ঠান্ডা অনুভব করার জন্য। অনেক সময় মানুষের সংস্পর্শে এসে এরা মানুষ কে দংশন
করে।অনেক সময় দেখা যায় সাপ দংশন করার সাথে সাথে পালিয়ে যায়। যার কারণে সাপে
কেটেছে না অন্য কোন প্রাণী কেটেছে এটা বোঝার ক্ষেত্রে একটু সমস্যা হয়।
এটি বুঝার ক্ষেত্রে কিছু লক্ষণ এবং কাটার ধরন দেখে বোঝা যায়। কাটা ধরন দেখে
কিভাবে বুঝব এটি সাপে কামড়ানোর লক্ষণ এটি বোঝার জন্য নিচে কিছু ছবি দেওয়া হলো।
যা দেখে আপনি বুঝতে পারবেন আপনাকে সাপে কেটেছে। নিম্নে সাপে কামড়ানোর কিছু ছবি
দেওয়া হলোঃ
১.এই ছবিতে দেখা যাচ্ছে সাপে কামড়ানোর ফলে একজনের হাত ফুলে গেছে। সাপে কামড়ানোর
ফলে যে বিষক্রিয়া হয় তা থেকে প্রদাহ, ফোলাভাব এবং ব্যথা হতে পারে।
২.এই ছবিতে দেখা যাচ্ছে সাপে কামড়ানোর ফলে একজনের পা ফুলে গেছে। সাপে কামড়ানোর
ফলে যে বিষক্রিয়া হয় তা থেকে শরীরের বিভিন্ন অংশে ফোলাভাব দেখা দিতে পারে।
৩.এই ছবিতে দেখা যাচ্ছে সাপে কামড়ানোর দাগ। সাপের দাঁতের দাগ সাপে কামড়ানোর
একটি সাধারণ লক্ষণ।
৪.এই ছবিতে দেখা যাচ্ছে সাপে কামড়ানোর ফলে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। সাপে কামড়ানোর ফলে
যে বিষক্রিয়া হয় তা থেকে রক্তক্ষরণ হতে পারে।
মনে রাখবেন যে সাপে কামড়ানোর লক্ষণগুলি ভিন্ন হতে পারে এবং এগুলি সাপের প্রজাতি,
কামড়ানোর স্থান এবং ব্যক্তির বিষক্রিয়ার প্রতি সংবেদনশীলতার উপর নির্ভর করে।
আপনি যদি মনে করেন যে আপনাকে সাপ কামড়িয়েছে তবে দ্রুত চিকিৎসা সহায়তা নেওয়া
গুরুত্বপূর্ণ।
বিষধর সাপে কামড়ানোর লক্ষণ
পৃথিবীতে বহু প্রজাতির সাপ আছে। এদের মধ্যে কিছু প্রজাতি বিষ থাকে না আবার কিছু
প্রজাতি বিষধর অনেক বিষ থাকে। যা কোন মানুষ বা পশু পাখিকে কামড়ানোর সাথে সাথে
কিছু সময়ের মধ্যে তাদের মৃত্যু হয়ে যেতে পারে। সাপ কামড়ানোর পরে যদি সাপ দেখতে
না পায় তাহলে সাপের কামড় দেখে বোঝার কিছু উপায় আছে।
যা দেখে বোঝা যায় যে এটি বিষধর সাপ নাকি অন্য কোন সাপ। বিষধর সাপ কামড়ালে
কামড়ের কিছু লক্ষণ দেখে বুঝা যায় যে এটি বিষধর সাপে কামড়িয়েছে।বিষধর সাপে
কামড়ানোর লক্ষণগুলি দুটি ভাগে ভাগ করা যেতে পারে।যেমন-
- স্থানীয় এবং
- প্রবাদী
স্থানীয় লক্ষণগুলি-- কামড়ানোর স্থানেই ঘটে এবং এতে অন্তর্ভুক্ত থাকতে
পারে-
- দুটি ছিদ্র চিহ্ন
- ব্যথা
- ফোলাভাব
- লালভাব
- ত্বকের রঙ পরিবর্তন
- রক্তপাত
প্রবাদী লক্ষণগুলি-- শরীরের অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে পড়ে এবং এতে
অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে-
- বমি বমি ভাব
- বমি
- ডায়রিয়া
- মাথাব্যথা
- মাথা ঘোরা
- দুর্বলতা
- পক্ষাঘাত
- শ্বাসকষ্ট
- অচেতনতা
বিষধর সাপে কামড়ানোর কিছু নির্দিষ্ট লক্ষণ রয়েছে।যেমন-
- কোবরা: ঘাড়ের পেশীগুলিতে শক্ততা, পতনের পাতা, এবং শ্বাসকষ্ট
- ক্রেট: মুখ এবং গলার ফোলাভাব, শ্বাসকষ্ট, এবং গিলে ফেলতে অসুবিধা
- ম্যাম্বা: পক্ষাঘাত, শ্বাসকষ্ট, এবং অচেতনতা
- রাসেলস ভাইপার: অভ্যন্তরীণ রক্তপাত, প্রস্রাবে রক্ত, এবং অচেতনতা
আপনি যদি মনে করেন যে আপনি বা আপনার পরিচিত কেউ বিষধর সাপে কামড়িয়েছে তবে
তাৎক্ষণিক চিকিৎসা সহায়তা নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। বিষক্রিয়ার চিকিত্সার জন্য
অ্যান্টিভেনিন প্রয়োজন।এখানে কিছু টিপস দেওয়া আছে, যা আপনাকে সাপে কামড়ানো
থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করবে। যেমন-
- জুতা এবং লম্বা প্যান্ট পরুন যখন আপনি এমন এলাকায় থাকেন যেখানে সাপ থাকতে পারে।
- আপনার আশেপাশ সম্পর্কে সচেতন থাকুন এবং সাপের জন্য দেখুন এবং শুনুন।
- পথ থেকে দূরে থাকুন এবং ঘন গাছপালা এড়িয়ে চলুন।
- রাতে বাইরে যাওয়া এড়িয়ে চলুন, যখন সাপ বেশি সক্রিয় থাকে।
- সাপকে দেখলে , তাকে একা ছেড়ে দিন এবং দূরে সরে যান।
সাপে কামড়ানো একটি গুরুত্বপূর্ণ চিকিৎসা জরুরী অবস্থা। আপনি যদি মনে করেন যে
আপনি বা আপনার পরিচিত কেউ বিষধর সাপে কামড়িয়েছে তবে তাৎক্ষণিক চিকিৎসা সহায়তা
নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ।
কালাচ সাপে কামড়ানোর লক্ষণ
কামড়ানোর ধরণ দেখে বা লক্ষণ দেখে বোঝা যায় এটি কোন জাতের সাপের কামড়।সাপের বহু
জাতের মধ্যে কালাচ এক ধরনের জাত। কালাচ সাপ বেশিরভাগ রাতে কামড়ায়। এ সাপের
কামড়ানোর লক্ষণ অনেক সময় অনেক দেরিতে বোঝা যায়। তাই কামড়ানোর সাথে সাথে দেরি
না করে হসপিটালে রোগীকে নিতে হবে। কালাচ সাপের কামড়ানোর কিছু লক্ষণ নিচে দেওয়া
হলো।
প্রাথমিক লক্ষণ (কামড়ের ১-২ ঘন্টার মধ্যে)
- কামড়ানো স্থানে তীব্র ব্যথা, ফোলাভাব এবং লালভাব।
- কামড়ানো স্থান থেকে রক্তপাত।
- মাথা ঘোরা, বমি বমি ভাব, বমি।
- শরীরে দুর্বলতা, অবসাদ।
- শ্বাসকষ্ট।
- মুখের পেশী শক্ত হয়ে যাওয়া (ঝাঁকুনি)।
- কথা বলতে অসুবিধা।
- গিলে ফেলতে অসুবিধা।
- চোখের পাতা পড়ে যাওয়া (শিবনেত্র)।
পরবর্তী লক্ষণ (কামড়ের ২-৪ ঘন্টার পরে)
- পুরো শরীরে ফোলাভাব।
- পেশী দুর্বলতা, পক্ষাঘাত।
- শ্বাসকষ্ট বৃদ্ধি।
- রক্তচাপ কমে যাওয়া।
- অজ্ঞান হয়ে যাওয়া।
- মৃত্যু (যদি চিকিৎসা না করা হয়)।
বিশেষ দ্রষ্টব্য
- কালাচ সাপের কামড়ে অনেক সময় লক্ষণ দেখা দিতে দেরী হয়।
- রাতের বেলায় কামড়ানোর ঘটনা বেশি ঘটে।
- কালাচ সাপের বিষ স্থানীয় ও স্নায়বিক প্রভাব ফেলে।
- কালাচ সাপের কামড়ানোর কোন নির্দিষ্ট প্রতিষেধক নেই।
- দ্রুত চিকিৎসা প্রদান জীবন বাঁচাতে পারে।
কালাচ সাপে কামড়ালে কি করবেন
- কালাচ সাপে কামড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে আক্রান্ত ব্যক্তিকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যান।
- কামড়ানো স্থানটিকে হৃৎপিণ্ডের চেয়ে নিচে স্থির রাখুন।
- আক্রান্ত ব্যক্তিকে আশ্বস্ত করুন এবং শান্ত রাখুন।
- কোনো বাঁধন, কাটাছেঁড়া, মুখে ঔষধ, ঝাড়-ফুঁক ইত্যাদি করবেন না।
কালাচ সাপে কামড়ানো থেকে রক্ষা পেতে
- রাতের বেলায় সাবধানে চলাফেরা করুন।
- ঘরবাড়ি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখুন।
- জুতো-মোজা পরে ঘুমান।
- বাইরে ঘুমানোর সময় সাবধানতা অবলম্বন করুন।
সাপে কামড়ালে কোন ইনজেকশন দিতে হয়
সাপে কামড়ালে প্রথমে প্রাথমিকভাবে কিছু চিকিৎসার মাধ্যমে রোগীকে সুস্থ রাখার
পরে, রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর রোগীকে সাপে
কামড়ানোর জন্য কিছু চিকিৎসা এবং অ্যান্টিভেনাম ইনজেকশন দিতে হবে। অ্যান্টিভেনাম
হলো এক ধরনের ঔষধ যা সাপের বিষের বিরুদ্ধে কাজ করে। এই ইনজেকশন রক্তে প্রবেশ করে
বিষাক্ত পদার্থ কে নিষ্ক্রিয় করে।
এবং এর ফলে বিষের প্রভাব কমে যায়। এবং রোগী ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে যায়।কোন অ্যান্টিভেনাম ইনজেকশন ব্যবহার করতে হবে তা নির্ভর করে।কোন ধরনের সাপ কামড়েছে তার উপর। বাংলাদেশে বিভিন্ন ধরণের বিষাক্ত সাপ আছে, যেমন: কালো নাগ, কেউটে, গোখরা, ফণীমনসা, ধামন, ইত্যাদি। প্রতিটি ধরণের সাপের বিষের জন্য আলাদা আলাদা অ্যান্টিভেনাম ইনজেকশন আছে। যা ব্যবহৃত হয়,
- রোগীর বয়স ও ওজনের উপর।
- রোগীর শারীরিক অবস্থার উপর।
সাপে কামড়ালে দ্রুততম সময়ের মধ্যে হাসপাতালে যেতে হবে। হাসপাতালে চিকিৎসক রোগীর
অবস্থা পরীক্ষা করে সঠিক অ্যান্টিভেনাম ইনজেকশন নির্বাচন করবেন।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়
- কখনোই নিজে নিজে অ্যান্টিভেনাম ইনজেকশন দেওয়া উচিত নয়।
- সাপে কামড়ালে ক্ষতস্থানে কাটা বা চুম্বন করা উচিত নয়।
- ক্ষতস্থানটিকে হৃৎপিণ্ডের চেয়ে নিচের স্তরে রাখা উচিত।
- রোগীকে শান্ত রাখা উচিত এবং তাকে হাঁটতে বা ছুটতে দেওয়া উচিত নয়।
- অ্যান্টিভেনাম ইনজেকশনের কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে, যেমন: জ্বর, বমি বমি ভাব, মাথাব্যথা, ত্বকে ফুসকুড়ি, ইত্যাদি। এই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলি সাধারণত হালকা হয় এবং দ্রুত সেরে যায়।
(দ্রষ্টব্য: এই তথ্য শুধুমাত্র সাধারণ জ্ঞানের জন্য। সাপে কামড়ালে দ্রুততম
সময়ের মধ্যে হাসপাতালে যেতে হবে)
সাপে কামড়ালে মানুষ কেন মারা যায়
আগের যুগের মানুষ সাপে কামড়ালে রোযার উপর নির্ভর করে চিকিৎসা গ্রহণ করত। এতে করে
কিছু রোগী মারাও যেত। আসলে মারা যাওয়ার আরো কিছু কারণ ছিল তার মধ্যে অন্যতম কারণ
রোগী মানসিকভাবে সুস্থ হওয়ার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। রোযা বিভিন্ন ঔষধি গাছের
ব্যবহারের মাধ্যমে সাপে কাটা রোগীর বিষ ধ্বংস করার জন্য চেষ্টা করত।
কিছু রোগী বেঁচে যেত আবার কিছু রোগী মারা যেত। কিন্তু বর্তমানে চিকিৎসা বিজ্ঞানের
প্রচেষ্টায় সাপে কাটা রোগীর জন্য উন্নত চিকিৎসা সম্ভব হয়েছে। যা সাপে কাটা
রোগীর মৃত্যুর হার অনেক অংশে কমিয়ে নিয়ে এসেছে। সাপে কামড়ালে মানুষ মারা যেতে
পারে বিভিন্ন কারণে। এর মধ্যে প্রধান কারণগুলো হলো:
বিষক্রিয়া
বিষাক্ত সাপের কামড়ে মানুষের শরীরে বিষ প্রবেশ করে, যা বিভিন্ন শারীরিক
ক্রিয়াকলাপে ব্যাঘাত ঘটায় এবং মৃত্যুর কারণ হতে পারে।বিষের প্রভাব বিভিন্ন
প্রজাতির সাপের উপর নির্ভর করে। কিছু সাপের বিষ স্নায়ুতন্ত্রকে আক্রমণ করে, কিছু
রক্ত জমাট বাঁধা ব্যাহত করে, এবং কিছু টিস্যু ধ্বংস করে।
বিষের প্রভাব দ্রুত হতে পারে, কিছুক্ষণের মধ্যে মৃত্যু ঘটাতে পারে। কিছু
ক্ষেত্রে, বিষের প্রভাব ধীরে ধীরে দেখা দেয় এবং কয়েক ঘন্টা বা দিনের মধ্যে
মৃত্যু ঘটাতে পারে।
চিকিৎসার অভাব
- বিষক্রিয়ার প্রতিষেধক (অ্যান্টিভেনম) সঠিক সময়ে এবং সঠিক পরিমাণে না দেওয়া হলে মৃত্যু ঘটতে পারে।
- অনেক গ্রামীণ এলাকায়, অ্যান্টিভেনম সহজলভ্য নয়, অথবা দ্রুত হাসপাতালে পৌঁছানো সম্ভব হয় না।
- কিছু ক্ষেত্রে, ভুল চিকিৎসা বা ঝাড়ফুঁকের কারণে মৃত্যু ঘটতে পারে।
অন্যান্য কারণ
- কামড়ের স্থান: মুখ, ঘাড়, বা বুকে কামড়ালে বিষ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে মৃত্যুঝুঁকি বেড়ে যায়।
- বয়স: শিশু এবং বৃদ্ধদের বিষক্রিয়ার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে, তাই তাদের মৃত্যুর ঝুঁকি বেশি।
- অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যা: যারা ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, বা কিডনির সমস্যায় ভুগছেন তাদের মৃত্যুর ঝুঁকি বেশি।
সাপে কামড়ালে মৃত্যু ঠেকানোর উপায়:
- দ্রুততম সময়ে হাসপাতালে যাওয়া।
- অ্যান্টিভেনম প্রয়োগ করা।
- কামড়ানো স্থান পরিষ্কার এবং নিরাপদ রাখা।
- শান্ত থাকা এবং আতঙ্কিত না হওয়া।
- সচেতনতা বৃদ্ধি এবং প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সাপে কামড়ালে মৃত্যুর হার কমানো সম্ভব।
শেষ কথা-সাপে কামড়ালে প্রাথমিক চিকিৎসা ২০২৪
সাপে কামড়ানো রোগীকে সঙ্গে সঙ্গে হসপিটালে নিয়ে লক্ষণ নির্ণয় করে চিকিৎসার
মাধ্যমে সুস্থ করা যাই। সাপে কাটা রোগীকে নিয়ে কোন সময় অবহেলা করা যাবে না। এতে
করে যদি সাপ বিষধর প্রকৃতির হয়ে থাকে তাহলে রোগীর মৃত্যু হওয়ার সম্ভাবনা বেশি
থাকে। তাই সাপে কাটা লক্ষণ নির্ণয় করে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে রোগীকে হসপিটালে
নেওয়ার মাধ্যমে দ্রুত চিকিৎসা করা প্রয়োজন।সাপে কাটা রোগীকে কখনো কোন কবিরাজের
মাধ্যমে বিষ নামানোর চেষ্টা করবেন না।
এতে করে রোগীর গা থেকে সম্পূর্ণ বিষ নাও নামতে পারে। পরবর্তীতে বিষক্রিয়া হওয়ার
সম্ভাবনা থাকে। তাই হাসপাতালে দ্রুত চিকিৎসার মাধ্যমে সম্পূর্ণ বিষক্রিয়া
নির্মূল করা দরকার। প্রিয় পাঠক, আমার এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনার যদি ভালো লাগে
তাহলে অবশ্যই আপনি আপনার বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করতে ভুলবেন না। এবং আরো কিছু
জানার থাকলে কমেন্ট বক্সে জানিয়ে দিবেন, ধন্যবাদ।০৫
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url