তাহাজ্জুদের নামাজের সময়সূচী ২০২৪ - ৩৬৫ দিনের তাহাজ্জুদ নামাজের সময়সূচী ২০২৪
সকালে খালি পেটে মধু খাওয়ার নিয়ম ২০২৪ আসসালামু আলাইকুম, আমার দ্বীনি ভাই ও বোনেরা।আপনারা কি তাহাজ্জুদের
নামাজের সময়সূচী ২০২৪ সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন তাহলে আজকের আর্টিকেলটি আপনার
জন্য। আজকে আমি এই আর্টিকেলটিতে তাহাজ্জুদের নামাজের সময়সূচী ২০২৪ সম্পর্কে
বিস্তারিত আলোচনা করতে চলেছি। তাই তাহাজ্জুদের নামাজ ২০২৪ সম্পর্কে জানতে
আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বিস্তারিত পরে নিন।
এই আর্টিকেলটিতে তাহাজ্জুদের নামাজের সময় কখন থেকে শুরু আবার কোনগুলো সূরা দিয়ে
তাহাজ্জুদের নামাজ আদায় করতে হয়।সেগুলো বিষয় নিয়ে পুরোপুরি আলোচনা করা হয়েছে।
তাই আপনার কাঙ্খিত সেই প্রশ্নের উত্তর এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়ার মাধ্যমে
পেয়ে যাবেন। তাই দেরি না করে তাহাজ্জুদের নামাজের সময়সূচী ২০২৪ সম্পর্কে
বিস্তারিত জেনে নেওয়ার জন্য আর্টিকেলটি পড়ে নিন।
তাহাজ্জুদ সালাতের ফজিলত
তাহাজ্জুদের নামাজ রাতের শেষ ভাগে ঘুম থেকে উঠে আদায় করতে হয়। রাতের তৃতীয়াংশে
ঘুম থেকে জেগে নামাজ আদায় করলে মহান আল্লাহু মর্যাদা দান করেন সম্মানে ভূষিত
করেন। আল্লাহ তাআলার পবিত্র কুরআনে বলেন, ‘আর রাতের কিছু অংশ তাহাজ্জুদ পড়বে।
এটা তোমার অতিরিক্ত দায়িত্ব। তোমার রব তোমাকে প্রশংসিত স্থানে প্রতিষ্ঠিত
করবেন।’( সূরা বনী ইসরাইল, আয়াত:79)
তাহাজ্জুদের নামাজের সময়সূচী ২০২৪
অনেকে আছেন যারা তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ার জন্য খুব আগ্রহী। কিন্তু তাহাজ্জুদ
নামাজের সময়সূচি সঠিকভাবে জানেন না।কোন সময় তাহাজ্জুদের নামাজ শুরু করতে হয়।
যাদের তাহাজ্জুদের নামাজের সময়সূচী ২০২৪ সম্পর্কে সঠিক জানা নেই তাদেরকে
তাহাজ্জুদের নামাজ ২০২৪ সম্পর্কে জেনে নিতে হবে। তাহলে চলুন আর দেরি না করে
তাহাজ্জুদের নামাজের সময়সূচী ২০২৪ সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন।
তাহাজ্জুদ নামাজ আদায়ের সঠিক সময় হচ্ছে মধ্য রাতের পর অর্থাৎ রাতে দুই তৃতীয়
অংশ অতিবাহিত হওয়ার পর তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করতে হয়। অর্থাৎ রাত্রে দুইটার পর
থেকে ফজরের নামাজের আগ পর্যন্ত তাহাজ্জুদের নামাজের সময়। এই সময়ের মধ্যে
তাহাজ্জুদের নামাজ আদায় করতে হয়। আপনারা তাহাজ্জুদের নামাজের সময়সূচি ২০২৪ সাল
থেকে এভাবে আদায় করবেন। আশা করি তাহাজ্জুদের নামাজের সময়সূচী ২০২৪ সম্পর্কে
সম্পন্ন ধারণা হয়েছে।
রাত ১২ টার পর তাহাজ্জুদ নামাজ পড়া যাবে কি?
অনেকেই জানতে চায় রাত ১২টার পর থেকে তাহাজ্জুদের নামাজ আদায় করা যাবে কিনা।
এশার নামাজ আদায়ের পর থেকে সুবহে সাদেকের আগ পর্যন্ত সালাতুল লাইল বা
তাহাজ্জুদের নামাজ পড়া যায়। তবে অর্ধ রাতের পর থেকে ফজরের সালাতের আগ পর্যন্ত
তাহাজ্জুদের নামাজ আদায় করা ভালো। তবে শেষ রাতে তাহাজুদের নামাজ আদায় করা
সর্বোত্তম।
হযরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, ফরজ নামাজের পর সব নফল নামাজের মধ্যে
শ্রেষ্ঠ হল তাহাজ্জুদ নামাজ তথা রাতের নামাজ।(মুসলিম, তিরমিজি, নাসাঈ) ।আল্লাহ
তা'আলা প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বিশেষভাবে রাতে তাহাজ্জুদ
নামাজ পড়া নির্দেশ দিয়েছিলেন। আল্লাহ তাআলা বলেন- হে চাদর আবৃত, রাতের সালাতে
দাঁড়াও কিছু অংশ ছাড়া।( সূরা মুজাম্মিল: আয়াত ১-২)
তাহাজ্জুদ নামাজ কি কি সূরা দিয়ে পড়তে হয়?
আসলে যে কোন সূরা দিয়ে এ নামাজ পড়া যায়। তাহাজ্জুদ নামাজ হলো নফল নামাজের
মধ্যে শ্রেষ্ঠ নফল নামাজ। যারা বিনা হিসাবে জান্নাতে যেতে পারবেন তাদের মধ্যে
একশ্রেণীর লোক হলেন তারা, যারা যত্নের সঙ্গে তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করেন। প্রিয়
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দুই রাকাত করে নামাজ আদায় করতেন।এ নামাজ
যে কোন সুরা দিয়ে পড়া যায়। তবে তিনি লম্বা কেরাতে নামাজ আদায় করতেন। এজন্য
লম্বা কেরাতে তাহাজ্জুদ আদায় করা উত্তম।
তাকবিরে তাহরীমা ‘আল্লাহু আকবার’ বলে নিয়ত বাধা। অতঃপর ছানা পড়া। সুরা ফাতেহা
পড়া। সূরা মিলানোর তথা কেরাত পড়া। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম অনেক লম্বা কেরাত পড়তেন।অতঃপর অন্যান্য নামাজের ন্যায় রুক সিজদা আদায়
করা। এভাবেই দ্বিতীয় রাকাত আদায় করে তাশাহুদ, দুরুদ ও দোয়া মাসুরা পড়ে সালাম
ফেরানোর মাধ্যমে নামাজ সম্পূর্ণ করা।
তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ে কিছু চাইলে কি কবুল হয়?
উপসংহারে, যদিও তাহাজ্জুদ নামাজ পড়া অত্যন্ত ব্যঞ্জনীয়, তবে এর অর্থ এই নয় যে
এই নামাজের বাইরে করা দোয়া কবুল হবে না। আল্লাহ সুবহানা তায়ালা পরম করুনাময়
এবং তার বান্দাদের আন্তরিক প্রার্থনা কবুল করেন। তাহাজ্জত নামাজের অসংখ্য
উপকারিতা রয়েছে এবং এটি আল্লাহর কাছে ক্ষমা ও রহমত ও বরকত কামনার একটি উপায়।
তাহাজ্জুদ আদায়ের মাধ্যমে বান্দা তার মালিকের কাছে কিছু চাইলে মালিক তা ফেরত দেন
না। আল্লাহ তায়ালা তাহাজ্জুদ সালাতে অসংখ্য ফজিলত দিয়েছেন। তাহাজ্জুদ সালাতের
মাধ্যমে আল্লাহ তা'আলা বান্দার অতি কাছাকাছি থাকে এবং বান্দা তাহাজ্জুদ সালাত
আদায়ের মাধ্যমে আল্লাহর কাছে হালালভাবে যা চায়। আল্লাহ তা'আলা বান্দাকে খালি
হাতে ফেরত দেন না।
বেতের নামাজের পর তাহাজ্জুদ নামাজ পড়া যাবে কি?
তাহাজ্জুদ সালাত সম্পর্কে অনেকেই বলে থাকেন বেতর নামাজের পরে তাহাজ্জুদ সালাত
পড়া যাবে কিনা বা বেতের সালাতের পরে তাহাজ্জুদ পড়া যাবে কিনা উত্তর হল পড়া
যাবে। তবে উত্তম হলো রাতের নামাজকে বেজোড় করে দেওয়া। কোন ব্যক্তি যদি এশার
সালাতের সাথে সালাতুল বেতর আদায় করে নেওয়ার পর আবার যদি রাত জেগে থাকেন, তাহলে
তিনি আবার তাহাজ্জুদ নামাজ পড়তে পারবেন।
সে ক্ষেত্রে বেতর আর দ্বিতীয়বার পড়তে হবে না। তবে উত্তম হলো তিনি যদি নিশ্চিন্ত
থাকেন যে আমি ইনশাআল্লাহ শেষ রাতে তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ার জন্য উঠবো। তাহলে
নামাজকে বেতর দিয়ে বিজোড় করা। আর যদি এশার সালাতের সাথে বেতর পড়ে থাকেন,
তারপরও তাহাজ্জুদ পড়তে পারবেন কোন অসুবিধা নেই।
তাহাজ্জুদ নামাজের সময় কখন শুরু হয়
তাহাজ্জুদ নামাজের শুরু হয় মূলত রাত্রে এশার নামাজ শেষ হওয়ার পর থেকে শুরু হয়
এবং রাতের শেষ ভাগ পর্যন্ত অর্থাৎ ফজরের সালাতের আগ পর্যন্ত তাহাজ্জুদ সালাতের
সময় থাকে। এ সময়ের মধ্যে তাহাজ্জুত সালাত আদায় করতে হয়। তবে তাহাজ্জুদ সালাত
আদায়ের সর্বোত্তম সময় হলো রাতের শেষ অংশ। অথবা ফজরের নিকটবর্তী সময় যে
সময়টাকে আমরা রাতের এক তৃতীয়াংশ বলি।
তবে কোন ব্যক্তি যদি ঘুমিয়ে পড়ার আশঙ্কায় থাকে যে তার তাহাজ্জুদের সালাত আদায়
নাও হতে পারে। তাহলে সে ব্যক্তি যেন রাতের প্রথম ভাগে তাহাজ্জুদের সালাত আদায়
করে নেয়। কারণ তাহাজ্জুদের সালাতে আল্লাহ সুবহানা তায়ালা অনেক ফজিলত দিয়ে
রেখেছেন। তাহাজ্জুদ সালাত আদায়ের মাধ্যমে বান্দা তার মালিকের অনেক কাছাকাছি যেতে
পারে।
তাহাজ্জুদ নামাজের শেষ সময় কখন
তাহাজ্জুদের নামাজের শেষ সময় হলো ফজরের নামাজের আগ পর্যন্ত অর্থাৎ এশার নামাজের
পর থেকে সুবহে সাদিকের আগ পর্যন্ত সালাতুল লাইল বা তাহাজ্জুদ নামাজ পড়া যায়।
তবে অর্ধ রাতের পর থেকে তাহাজ্জুদের সালাত আদায় করা ভালো। তবে শেষ রাতে
তাহাজ্জুদের সালাত আদায় করা সর্বোত্তম। কারণ শেষ রাতে মানুষ গভীর ঘুমে নিমজ্জিত
থাকে।
ঠিক সেই সময় আল্লাহ সুবহানাহ তায়ালা সপ্তম আকাশে আসে বান্দার দোয়া কবুলের
জন্য। এই সময় কোন বান্দা তার শান্তির ঘুম অপেক্ষা করে আল্লাহ তাআলার কাছে
তাহাজ্জুদের সালাতের মাধ্যমে যেটা চাই আল্লাহ তা'আলা বান্দাকে সেটি অতি দ্রুত
দিয়ে দেন। তাহাজ্জুতের নামাজ দুই রাকাত থেকে ১২ রাকাত পর্যন্ত পড়ার বর্ণনা
পাওয়া যায়।
তাহাজ্জুদ নামাজ কি লাইট অফ করে পড়তে হয়?
অনেকের প্রশ্ন থাকে যে তাহাজ্জুদের সালাত আলোতে পড়তে হয়,না অন্ধকারে পড়তে হয়।
আবার অনেকে বলে এই সালাত অন্ধকারে আদায় করতে হয়।কিন্তু এ ধারণার কোনো ভিত্তি
নেই। তাহাজ্জুদের সালাত আমরা আলোতে পড়তে পারি আবার অন্ধকারও পড়তে পারে। কিছু
মানুষ আছে যারা সালাতে মনোযোগী হওয়ার জন্য রাতের বেলায় আলোতে বেশি সমস্যা হয়।
তাই আলো কমিয়ে এই সালাত আদায় করে থাকেন। কিন্তু, পরিপূর্ণ অন্ধকারে সালাত
আদায়ের ব্যাপারে শরীয় উৎসাহ দেয় না। এজন্য আমি বলব যে তাহাজ্জুদের সালাত আলোতে
পড়বেন না অন্ধকারে পড়বেন এটা আপনার উপর নির্ভর করবে। আপনি যেভাবে পড়ে
স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করবেন সেভাবেই আপনাকে তাহাজ্জুদের সালাত আদায় করা
উত্তম।তাহাজ্জুদের সালাত গভীর রাতের সালাত এ সালাত মালিককে বান্দার কাছে নিয়ে
আসে।
যাতে করে বান্দা মালিকের অতি কাছে থেকে তার মনের চাহিদা আল্লাহ তাআলার কাছে চাইতে
পারে। তাহাজ্জুদের নামাজে এতটাই ফজিলতপূর্ণ যে মনোযোগ সহকারে তাহাজ্জুদ সালাত
আদায় করবে এবং আল্লাহ তাআলার কাছে কোন কিছু চাইলে আল্লাহ তাআলা তাকে ফিরিয়ে
দেবেন না। নিয়মিত যত্ন সহকারে তাহাজ্জুদ সালাত আদায়কারী ব্যাক্তি আল্লাহ
তায়ালার কাছে অধিক প্রিয় হয়ে থাকেন।
তাহাজ্জুদ নামাজের সময় কয়টা থেকে কয়টা পর্যন্ত
এশার সালাত শেষ করার পর থেকে ফজরের নামাজের আগ পর্যন্ত তাহাজ্জুদ নামাজের সময়।
তবে সবচাইতে উত্তম সময় রাতের শেষ ভাগ অর্থাৎ ফজরের সালাতের আগে। রাতের এক তৃতীয়
অংশ তাহাজ্জুদ নামাজের জন্য উত্তম সময়। যদি কোন ব্যক্তি শেষ রাতে জাগতে পারবে না
এমন আশঙ্কায় যদি থেকে থাকেন তাহলে এশার নামাজ শেষে রাতে তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ে
নিতে পারেন।
তবে তাহাজ্জুদের সবচাইতে উত্তম সময় হলো রাতের শেষ প্রহর অর্থাৎ ফজরের নামাজের
আগে।এ সময় আল্লাহ তায়ালা সপ্তম আকাশে থাকেন। এবং বান্দার মনের আশা পূরণের জন্য
বান্দার কাছ থেকে ফরিয়াদ এবং বান্দার চাওয়া গুলো কবুল করে নেয়। এজন্য এশার
নামাজের পর থেকে ফজরের নামাজের পূর্ব পর্যন্ত তাহাজ্জুদের নামাজের সময় এবং
সর্বোত্তম সময় হলো রাতের শেষভাগ অর্থাৎ ফজরের আগে।
শেষ কথা - তাহাজ্জুদ নামাজের সময়সূচী
তাহাজ্জুতের সালাত আল্লাহতালা এতটাই মর্যাদা সম্পন্ন করেছেন যে একদল ব্যক্তি বিনা
হিসেবে জান্নাতে প্রবেশ করবেন। যারা নিয়মিত যত্ন সহকারে তাহাজ্জুদ আদায় করেছেন।
তাহাজ্জুদ নামাজ আদায়ের মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা বান্দার মনের ইচ্ছাগুলো অতি
তাড়াতাড়ি পূরণ করে থাকেন। অনেকে বিভিন্ন রকমের প্রশ্ন করে থাকেন তাহাজ্জতের
সালাত কিভাবে আদায় করতে হয়।
কখন থেকে শুরু করতে হয় কিভাবে শুরু করতে হয়। বিস্তারিত আজকের এই আর্টিকেলটিতে
আলোচনা করা হয়েছে। আপনি যদি তাহাজ্জুদ সালাত সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান তাহলে
আপনি আর্টিকেলটি উপরে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পুনরায় পড়ে নিন আশা করি আপনি আপনার
সকল প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবেন।
প্রিয় পাঠক, আপনি যদি আমার এই আর্টিকেলটি পড়ে থাকেন তাহলে তাহাজ্জুদের সালাত
সম্পর্কে এবং এর ফজিলত সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন। আমার এই আর্টিকেলটি পড়ে
যদি আপনার ভালো লাগে তাহলে অবশ্যই আপনি আপনার বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করতে ভুলবেন
না। এবং এই আর্টিকেল সম্পর্কে আপনার যদি কোন মতামত থেকে থাকে কমেন্ট বক্সে
জানিয়ে দিয়েন। ধন্যবাদ। তাদের
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url