শ্বাসকষ্ট হলে কি কি খাওয়া যাবেনা - শ্বাসকষ্ট রোগীর জন্য কোন খাবার নিষেধ ২০২৪

সাপে কামড়ালে প্রাথমিক চিকিৎসা ২০২৪ - সাপে কাটার প্রাথমিক চিকিৎসা, দ্রুত জেনে নিনপ্রিয় পাঠক, আজকে আমরা আলোচনা করতে চলেছি শ্বাসকষ্ট হলে কি কি খাওয়া যাবেনা। শ্বাসকষ্ট রোগের জন্য কোন খাবার নিষেধ।আপনি কি জানেন শ্বাসকষ্ট হলে কি কি খাবার খাওয়া নিষেধ। যদি জেনে না থাকেন তাহলে চলুন আমরা জেনে নেই। শ্বাসকষ্ট থেকে মুক্তি পেতে হলে কিছু খাবার খাওয়া থেকে একদম বিরত থাকা দরকার। 
শ্বাসকষ্ট হলে কি কি খাওয়া যাবেনা
শ্বাসকষ্ট হলে কি কি খাওয়া যাবেনা সেই সম্পর্কে নিচে আর্টিকেলটিতে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আপনি যদি এই আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ে নিতে পারেন। তাহলে আপনি এই রোগ থেকে মুক্তির উপায় খুঁজে পাবেন। এবং পরবর্তীতে যেন না হয় সেই বিষয়ে অবগত থাকতে পারবেন। তো চলুন দেরি না করে মূল আলোচনায় যাওয়া যাক।

শ্বাসকষ্ট কি? 

শ্বাসকষ্ট এমন একটি শারীরিক অবস্থা।একজন মানুষ যখন মনে করে যে সে যথেষ্ট আরামদায়কভাবে শ্বাস গ্রহণ করতে পারছে না। শ্বাস গ্রহণের ক্ষেত্রে স্বাভাবিকভাবে শ্বাস নিতে পারছে না। একে ইংরেজি চিকিৎসাবিজ্ঞানিক পরিভাষায় ডিসপ্নিয়া(Dyspnoea)বলা হয়। শ্বাসকষ্ট বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই হার্ট বা ফুসফুসের বিভিন্ন ধরনের সমস্যার কারণে হয়ে থাকে। 
আমাদের শরীরে হৃদপিণ্ড ও ফুসফুস আমাদের শরীরের টিস্যুতে অক্সিজেন পরিবহন ও কার্বন-ডাই-অক্সাইড অপসরণের সাথে জড়িত এবং এই প্রক্রিয়াগুলির যেকোনো একটির সাথে সমস্যা গুলি আমাদের শ্বাসকে প্রভাবিত করে থাকে। শ্বাসকষ্ট বলতে শ্বাস নিতে না পারা শ্বাস নিতে সমস্যা হওয়া শ্বাস বন্ধ হয়ে যাওয়া রেসিপিরাটরি ডিসট্রেস ইত্যাদি বোঝায়।

শ্বাসকষ্ট হলে কি কি খাওয়া যাবেনা

আজকে আমি এই আর্টিকেলে আলোচনা করব শ্বাসকষ্ট হলে কি কি খাওয়া যাবেনা এবং শ্বাসকষ্ট রোগের জন্য কোন খাবার নিষেধ সেই সম্পর্কে। আপনি যদি শ্বাসকষ্ট সমস্যায় ভুগেন তাহলে অবশ্যই আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে শ্বাসকষ্ট হলে কি কি খাওয়া যাবে না সেই বিষয়গুলির উপর। কারণ শ্বাসকষ্ট এমন একটি ব্যাধি যা মানুষকে মৃত্যু ঘটাতে পারে।শ্বাসকষ্ট অধিক পরিমাণে বৃদ্ধি পেলে মানুষের ফুসফুসে সমস্যার সৃষ্টি হয়। 
শ্বাসকষ্ট হলে কি কি খাওয়া যাবেনা
যার ফলে একসময় সেই মানুষের মৃত্যু হয়ে যায়।তবে শ্বাসকষ্ট হলে কি কি খাওয়া যাবেনা সেই বিষয়গুলোর উপর যদি আপনি সঠিকভাবে নজর রাখেন। তাহলে শ্বাসকষ্ট থেকে কিছুটা ভালো থাকা যায়। আজকে আমি আলোচনা করব শ্বাসকষ্ট হলে কি কি খাওয়া যাবেনা এবং আরো আলোচনা করব শ্বাসকষ্টের লক্ষণগুলো কি কি এই বিষয়ে। তো চলুন দেরি না করে আলোচনা করা যাক শ্বাসকষ্ট হলে কি কি খাওয়া যাবেনা এই বিষয়গুলো নিয়ে।

১. পেটে গ্যাস উৎপন্ন করে এমন খাবার

পেটে গ্যাস উৎপন্ন করতে সাহায্য করে এমন ধরনের খাবার খাওয়া যাবেনা। এই ধরনের খাবার শ্বাসকষ্ট হওয়ার ক্ষেত্রে সাহায্য করে। তাই এই ধরনের খাবার খাদ্য তালিকায় না রাখায় ভালো। যেমন বাঁধাকপি, কার্বনেটেড ড্রিংস, পিঁয়াজ, রসুন, এবং অতিরিক্ত ভাজাপোড়া খাদ্য এরিয়ে চলতে হবে।

২.ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড থেকে দূরে থাকুন

ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড অ্যাজমা রোগীর জন্য শ্বাসকষ্ট বাড়িয়ে দেয়। ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড জাতীয় খাবার থেকে দূরে থাকতে হবে।

৩.ফ্রোজেন আলুর চিপস

ফ্লজেন আলুর চিপস খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। দোকানে ফ্রজেন ফ্রেঞ্চ ফ্রাই কিনতে পাওয়া যায়। এগুলো ফ্রিজে থাকার কারণে আলু ডিহাইড্রেটেড হয়ে যায়। এটি খাওয়ার কারণে শ্বাসকষ্টের সমস্যা বেড়ে যায়।

৪.ঠান্ডা দুগ্ধজাত খাবার

শ্বাসকষ্ট রোগের জন্য ঠান্ডা জাতীয় খাবার একদম খাওয়া যাবেনা। যেমন ঠান্ডা দুধ, ঠান্ডা পানি, ঠান্ডা দই, ঠাণ্ডা আইসক্রিম ইত্যাদি ঠান্ডা জাতীয় খাবার। এই ধরনের খাবার শ্বাসকষ্টে সৃষ্টিতে এবং যাদের শ্বাসকষ্ট আছে তাদের শ্বাসকষ্ট বাড়িয়ে দিতে সাহায্য করে। এবং সর্দি ও কাশির সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয়।

৫.সাপ্লিমেন্ট বা লিকুইড নাইট্রোজেন থেকে বিরত থাকা

সাপ্লিমেন্ট বা লিকুইড নাইট্রোজেনের ব্যবহার শ্বাসকষ্টের জন্য খুবই ক্ষতিকর। শ্বাসকষ্ট থেকে রক্ষা পেতে লিকুইড নাইট্রোজেন এর ব্যবহার এড়িয়ে চলতে হবে। এবং যেকোনো ধরনের সাপ্লিমেন্ট খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। কারণ এই ধরনের সাপ্লিমেন্ট খাবার শ্বাসকষ্ট বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।

৬.প্রিজারভেটিভ দেওয়া খাদ্য

শ্বাসকষ্ট থেকে মুক্তি পেতে হলে প্রিজারভেটিভ দেওয়া খাদ্য এড়িয়ে চলতে হবে। প্রিজারভেটিভ খাদ্য শ্বাসকষ্ট বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। বিশেষ করে সালফাইট যুক্ত খাদ্য গ্রহণ করা মানে গলায় অ্যালকোহল ঢেলে দেওয়ার মতন বিষয় হয়ে যায়। আচার, বোতলে বন্দি লেবুর রস, শুকনো ফলে ইচ্ছামতন সালফাইট মিশানো হয়। সালফেট যুক্ত খাবার শ্বাসকষ্ট রোগীর শ্বাসকষ্ট বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।

৭. চিংড়ি মাছ

চিংড়ি মাছের প্রচুর পরিমাণে সালফেটের পরিমাণ থাকে। এজন্য শ্বাসকষ্ট রোগীদের জন্য চিংড়ি মাছ খাওয়া একদম নিষেধ। শীতকালে ঠান্ডা চিংড়ি খেলে শ্বাসকষ্টের আক্রমণের সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে। এজন্য বিশেষ করে শীতকালে চিংড়ি মাছ না খাওয়াই ভালো।

৮. সালফাইটস

শুকনো ফল,আচার যুক্ত খাবার,ওয়াইন,চিংড়ি,লেবুর রস এগুলোতে প্রচুর পরিমাণে সালফাইট থাকে। এটি শ্বাসকষ্টের লক্ষণ আরো বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে। এজন্য এই ধরনের খাবার বর্জন করা জরুরী।

৯.এলার্জি জাতীয় খাবার থেকে বিরত থাকা

এলার্জি জাতীয় খাবার থেকে বিরত থাকতে হবে। মিষ্টি কুমড়া, গরুর মাংস, ইলিশ মাছ, ডিম, নারিকেল, পুইশাক, মসুর ডাল এগুলো খাবারে অনেক এলার্জি থাকে। এ খাবারগুলো খেতে থাকলে আপনার শ্বাসকষ্টের সমস্যা বাড়তে থাকবে। তাই এ জাতীয় খাবার থেকে বিরত থাকতে হবে। তাহলে আপনি শ্বাসকষ্ট থেকে বাঁচতে পারবেন।

১০. শুষ্ক ফল এড়িয়ে চলুন

সাধারণত হাঁপানি রোগটি এলার্জির কারণেই হয়ে থাকে। যেসব খাবার খেলে এলার্জি হয় সে ধরনের খাবার থেকে বিরত থাকা ভালো। শুষ্ক খাবারের সালফেটের পরিমাণ বেশি থাকে। যা এজমার সমস্যা বাড়িয়ে দেয় এবং শ্বাসকষ্ট হতে থাকে। এজন্য শ্বাসকষ্ট হলে এড়িয়ে চলতে হবে। তাহলে শ্বাসকষ্ট থেকে মুক্তি পাওয়া সহজ হবে।

১১.ডিম

স্বাস্থ্যকর ও প্রোটিন সমৃদ্ধ এই খাবারটি শ্বাসকষ্টের সময় না খাওয়াই ভালো। ডিমের সাদা অংশে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন থাকে আর এ প্রোটিন এলার্জির গতিকে বৃদ্ধি করে শ্বাসকষ্টের সমস্যার বৃদ্ধি করে থাকে। তাই এই সময় ডিম না খাওয়াই ভালো।

১২. দুধ

ক্যালসিয়ামের প্রধান উৎস হলো দুধ। দুধে থাকা প্রোটিন শ্বাসকষ্টের সমস্যা বাড়িয়ে দিতে সাহায্য করে। এজন্য যখন শ্বাসকষ্টের সমস্যা বেশি দেখা দেবে তখন দুধ না খাওয়াই ভালো। এছাড়া দুধ ক্যালসিয়ামের প্রধান উৎস যা দাঁত ও আহার মজবুত করার জন্য ক্যালসিয়ামের প্রয়োজন মিটায়।

১৩. চিনা বাদাম

চিনা বাদাম হলো স্বাস্থ্যকর একটি খাবার। শ্বাসকষ্ট রোগীদের জন্য চিনা বাদাম খুবই ক্ষতিকর একটি খাবার। গবেষণা থেকে জানা যায় যে চীনা বাদাম শ্বাসকষ্টের সমস্যা বাড়িয়ে দিতে সহায়তা করে থাকে।

১৪. টক জাতীয় ফল

কমলালেবু, মাল্টা, লেবু এ জাতীয় ফলগুলোতে সিট্রাস(citrus) বিদ্যমান থাকে।এগুলো ফল ভিটামিন সি তে পরিপূর্ণ হলেও এলার্জি ও এজমা এটাকের ঝুঁকি বাড়ায়। যারা শ্বাসকষ্ট রোগে আক্রান্ত তারা এ জাতীয় ফল শীতকালে খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন। তাছাড়া শ্বাসকষ্টের ঝুঁকি বেড়ে যাবে।

১৫. চা ও কফি

চা এবং কপি জাতীয় খাবারে প্রচুর পরিমাণে সালিসাইলেট জাতীয় উপাদান থাকে শ্বাসকষ্ট বাড়িয়ে দেয়। এজন্য চা ও কপি কম করে পান করতে হবে। চাও কফি কম করে পান করলে শ্বাসকষ্ট থেকে সহজেই মুক্তি পাওয়া।

১৬. ফাস্টফুড

ফাস্টফুড শুধু শরীরের ওজন বাড়াতে সাহায্য করে না। এটা ফুসফুসের বিভিন্ন সমস্যার সৃষ্টি করে। ফাস্টফুড জাতীয় খাবার গ্রহণের ফলে শিশুদের শ্বাসকষ্ট ও এজমা প্রবণতা ২৭ শতাংশ বেড়ে যায়। ফাস্টফুডে থাকা উচ্চমাত্রার সাচুরেটেড ফ্যাট অস্থায়ীভাবে মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে কমিয়ে দেয়। ফলে শ্বাসকষ্ট বা এজমা এটাকে ঝুঁকি বেড়ে যায়।

১৭.সয়া

সয়া হল প্রোটিন সমৃদ্ধ একটি খাবার।সোয়াতে প্রচুর পরিমাণে এলার্জিক প্রোটিন রয়েছে যা শ্বাসকষ্ট বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে থাকে। এজন্য শ্বাসকষ্ট রোগীদের অন্য রোগীদের থেকে বেশি সচেতন থাকতে হয়। এসব রোগীদের ঠান্ডা ধুলাবালি এড়িয়ে চলতে হবে। শ্বাসকষ্ট রোগীদের প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার সয়া বর্জন করা দরকার।

১৮. কৃত্রিম উপাদান

কৃত্রিম উপাদান যেমন, ফুড কালার, ফুট ফ্লেভার, ইত্যাদি প্রক্রিয়া জাত এবং ফাস্টফুড জাতীয় খাবারগুলোতে পাওয়া যায়। শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত ব্যক্তিদের এই খাবারগুলি না খাওয়াই ভালো। এতে করে শ্বাসকষ্টের ঝুঁকি বেড়ে যায়।

শ্বাসকষ্টের লক্ষণ গুলো কি কি

শ্বাসকষ্ট এমন একটি রোগ যেটি মানুষের শ্বাস প্রশ্বাস নিতে বিভিন্ন সমস্যার সৃষ্টি করে। এটি ফুসফুসের কার্যক্ষমতা কে কমিয়ে দেয়। ফলে সঠিক পরিমাণে শ্বাস নিতে এবং বর্জন করতে সমস্যা হতে থাকে। এই রোগের কিছু লক্ষণ থাকে যেগুলো নির্ণয়ের মাধ্যমে প্রাথমিক অবস্থাতেই চিকিৎসার মাধ্যমে পরিপূর্ণ সুস্থ হওয়া যায়। তাই এর লক্ষণগুলো সম্পর্কে জেনে থাকা ভালো। তাহলে অল্পতেই শ্বাসকষ্টের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। শরীরে এ ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হওয়ার আগে যে লক্ষণ গুলো দেখা দেয়-
  • ঘ্রাণ( শব্দে শ্বাস নেওয়া)
  • বুক টান
  • দ্রুত শ্বাস-প্রশ্বাস
  • উচ্চ হৃদস্পন্দনের হার বা ধরফড়
  • জোরে জোরে শ্বাস নেওয়ার দরকার মনে হবে
  • একটি গভীর শ্বাস পেতে কঠোর পরিশ্রম
এছাড়াও কখনো কখনো বুক ব্যথা এবং শ্বাসকষ্টের মত অন্যান্য উপসর্গ থাকতে পারে, এই ধরনের লক্ষণ গুলি অপেক্ষা করা উচিত নয়। এগুলো লক্ষণ দেখা মাত্রই অবিলম্বে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া দরকার।

শ্বাসকষ্ট নির্ণয়

শ্বাসকষ্ট এমন একটি বিষয় যা ফুসফুসের সঠিক কার্যকারিতা কমিয়ে দেওয়ার মাধ্যমে শ্বাস প্রশ্বাস গ্রহণ এবং বর্জনের ক্ষেত্রে বাধার সৃষ্টি করে। যার কারণে বিভিন্ন ধরনের শ্বাসতন্ত্রের সমস্যার সৃষ্টি হয়। প্রাথমিকভাবে কিছু লক্ষণ দেখার মাধ্যমে শ্বাসকষ্ট কিছুটা নির্ণয় করা যায়। কিন্তু সেটা সঠিক নাও হতে পারে অন্য কোন সমস্যার কারণেও এই লক্ষণ গুলো দেখা দিতে পারে। তাই শ্বাসকষ্ট হয়েছে কিনা তা নির্ণয়ের জন্য ডাক্তারের শরণাপন্ন হয়ে কিছু পরীক্ষা নিরীক্ষার মাধ্যমে শ্বাসকষ্ট নির্ণয় করা যায়। শ্বাসকষ্ট নির্ণয়কারী কিছু প্রক্রিয়া যেমন-
  • বুকের এক্স-রে
  • কম্পিউটেেড টমোগ্রাফি (সিটি)স্ক্যান
  • রক্তস্বল্পতা দেখতে রক্ত পরীক্ষা
  • ফুসফুস ফাংশন পরীক্ষা
  • কার্ডিওপালমোনারি ব্যায়াম পরীক্ষা যা রোগীকে ট্রেডমিলে হাটার মাধ্যমে করা যেতে পারে।

হঠাৎ শ্বাসকষ্ট হলে করণীয়

পরিবর্তিত জলবায়ু এবং দূষিত পরিবেশের কারণে আমাদের মধ্যে অনেকেরই শ্বাসকষ্টের সমস্যা দেখা দেয়। নানা কারণে শ্বাসকষ্ট হতে পারে। বিশেষ করে শীতকালে শ্বাসকষ্টের লক্ষণ বেশি দেখা দেয়। কারণ ঠান্ডার সাথে শ্বাসকষ্টের প্রকট বেড়ে যায়। তবে শ্বাসকষ্টের উপসর্গ দেখা দেওয়া মাত্রই সাথে সাথে চিকিৎসা গ্রহণ করা যায় তাহলে এ সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। 
শ্বাসকষ্টের সমস্যা বিভিন্ন কারণে বিভিন্ন সময় দেখা দিতে পারে। তাই শ্বাসকষ্টের প্রাথমিক চিকিৎসা জেনে থাকা খুবই ভালো। শ্বাসকষ্টের প্রাথমিক কিছু চিকিৎসার উপায় নিম্নে তুলে ধরা হলো-
  • ১. চেয়ারে বসে টেবিলের উপর একটি বালিশ রেখে উপর মাথা রেখে শুয়ে থাকলে শ্বাসকষ্টের সমস্যা থেকে কিছুটা আরাম পাওয়া যায়। এ অবস্থায় শ্বাস নিতে স্বস্তি পাওয়া যায়।
  • ২. হঠাৎ শ্বাসকষ্ট হলে মাথার নিচে বালিশ দিয়ে মাথা দিকটা উঁচু করে নিতে হবে তারপর পা ভাঁজ করে রেখে ক্যাথ হয়ে শুয়ে থাকতে হবে।
  • ৩. একটি চেয়ার কে সাপোর্ট হিসাবে ব্যবহার করে ঝুঁকে থাকলে এই সমস্যা থেকে আরাম পাওয়া যায়।
  • ৪.দেওয়ালের কাছ থেকে একটু সরে গিয়ে দেয়ালের সাথে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকলে শ্বাসকষ্ট কমে যায়।
  • ৫. এ সময় হালকা গরম পানিয় যেমন চা, কফি কিংবা গরম পানি পান করলে আরাম পাওয়া যায়।

দ্রুত শ্বাসকষ্ট কমানোর উপায়

দ্রুত শ্বাসকষ্ট কমানোর জন্য কিছু ঘরোয়া উপায় অবলম্বন করা যেতে পারে। যেগুলো উপায় অবলম্বনের মাধ্যমে আপনি শ্বাসকষ্ট থেকে দ্রুত মুক্তি পেতে পারেন। এবং শ্বাসকষ্ট হওয়া থেকে মুক্তি পেতে পারেন। চলুন জেনে নেওয়া যাক দ্রুত শ্বাসকষ্ট কমানোর ঘরোয়া কিছু উপায়-
  • সরিষার তেল-- সরিষার তেল হালকা গরম করে বুকে পিঠে এবং গলায় ভালোভাবে মালিশ করলে শ্বাসকষ্ট কমে যায়। ফুসফুস ঠিকমতো কাজ করলেই শ্বাস প্রশ্বাসও স্বাভাবিকভাবে হতে শুরু করে।
  • ডুমুর পানি-- কয়েকটি ডুমুর সারারাত পানিতে ভিজিয়ে রাখুন এবং সকালে খালি পেটে ডুমুর ও পানি খেয়ে ফেলুন। এছাড়াও শুকনা ডুমুর বাজারে কিনতে পাওয়া যায় এটিও খেতে পারেন। ব্রিদিং
  • এক্সারসাইজ--ব্রিডিং এক্সারসাইজ এর মধ্যে পার্সড লিপ ব্রিদিং হচ্ছে অনেক সহজ ও কার্যকরী। উদ্বেগের কারণে কখনো শ্বাসকষ্ট হয়ে থাকলেও এ পদ্ধতিটি অনেক বেশি কাজে আসে। স্টিম
  • ইনহেলার--স্টিম ইনহালেশন বা গরম ভাব নিলে শ্বাসনালীতে জমে থাকা ঘন স্লিম্মা তরলে পরিণত হয়। ফলে শ্বাসনালীতে কোন বাধা না থাকায় শ্বাসকষ্ট থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
  • হলুদের উপকারিতা-- হলুদে অনেক অ্যান্টি- ব্যাকটেরিয়াল এবং আন্টি ইনফ্লামেটরি গুণ রয়েছে। যা শ্বাসকষ্ট কমাতে খুব কার্যকরী ভূমিকা রাখে।

শেষ কথা- শ্বাসকষ্ট হলে কি কি খাওয়া যাবেনা

পরিবর্তিত জলবায়ু এবং দূষিত পরিবেশের কারণে আমাদের মধ্যে অনেকেরই শ্বাসকষ্টের সমস্যাটা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। শ্বাসকষ্টের সমস্যা থেকে বড় ধরনের সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। এমনকি শ্বাসকষ্টের সমস্যা তে মানুষের মৃত্যু হয়ে যায়। তাই এই সমস্যাকে কোন সময় তুচ্ছ হিসেবে দেখা যাবে না। শ্বাসকষ্ট এমন একটি রোগ যা ফুসফুসের বিভিন্ন সমস্যা তৈরি করে শ্বাস প্রশ্বাসে ব্যাঘাত ঘটায়। 
ফলে ফুসফুস সঠিক মত শ্বাস প্রশ্বাস গ্রহণ এবং বর্জন করতে পারে না। ফলে শ্বাস রোধ হয়ে রোগী মারা ও যেতে পারে। শ্বাসকষ্ট থেকে রক্ষা পেতে অবশ্যই ঘরোয়া কিছু উপায় জেনে থাকা দরকার যেগুলো তৎক্ষণিক রোগীর কিছুটা স্বস্তির সৃষ্টি করে। এবং খুব দ্রুত ডক্টরের শরণাপন্ন হয়ে চিকিৎসা গ্রহণ করতে সাহায্য করে। 
তবে শ্বাসকষ্ট কিছু জিনিস নিয়ম মতন মেনে চললে না হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি থাকে। প্রিয় পাঠক, আমার এই আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনার ভালো লাগে তাহলে আপনি আপনার বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করতে ভুলবেন না। এবং আরো কিছু জানার থাকলে কমেন্ট বক্সে জানিয়ে দিন, ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪